অনন্ত যাত্রা

বহুদিন বহুদিন পর বাসা থেকে বাক্স-পেটরা নিয়ে বের হলাম বাচ্চাদের নানা বাড়ি, দাদা বাড়ির উদ্দেশ্যে। স্বাভাবিকভাবেই পাঁচ জন সদস্যের একটি পরিবারের বাক্স-পেটরা অনেক বেশি। যদিও খুব অল্পস্বল্প নেয়ার চেষ্টা করেছি, তবে বাক্স-পেটরা সমাহার দেখে নিশ্চয়ই অনেক মনে হচ্ছিল।🧳👜💼🎒🧸🍼👒

তাই বিজিবি গেট থেকে বের হওয়ার সময় জিজ্ঞাসা করছিল, আমরা কি ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি!! 🙄
বাচ্চাদের বাবা উত্তর দিয়েছিল, বাচ্চাকাচ্চা কয়জন গুনে দেখেন!! 🤨 সেখান থেকে অনেক যানজট পেরিয়ে যখন স্টেশনে পৌঁছালাম, তখন স্টেশনে ঢুকেই নাওঈদের এক্সপ্রেশন হল – নানুর বাসায় চলে এসেছি 🎈🎈🎉🎉 তারা গত দুই দিন ধরে বেশ উত্তেজিত। প্রশ্ন উত্তর সেশন করতে করতে আমরা হয়রান।

যথারীতি ট্রেন ছাড়ার পর যাত্রা শুরু হল । ট্রেনে বসে ভাবছিলাম অল্প কিছুদিনের জন্য যাচ্ছি । কত কত জিনিস বাক্সবন্দি করে, চিন্তাভাবনা করে নিয়ে এসেছি। এতোদিন থাকতে হবে , কি কি লাগবে, ততোদিনের জিনিসপত্র নিয়ে এসেছি। বাসাটা গুছিয়ে রেখে এসেছি। আমরা কত অল্প সময়ের জন্য যাচ্ছি। অথচ গত কদিন ধরে এগুলো প্রিপারেশন নিয়ে জিনিসপত্র বাক্সবন্দী করেছি।

ভাবছিলাম আমরা কি এভাবেই প্রস্তুতি নিতে পারি বা প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করি , আমাদের অনন্তকালের জন্য?? যেখানে আমরা আজীবন থাকব !! অনন্তকালের বাসস্থানের জন্য কোন বাক্স-পেটরা এখনো গোছানো হয় নাই। সেখানে কিভাবে থাকবো মাঝে মাঝে বোধগম্য হয় না !!

মাত্রই খবর পেলাম আমার মেজো ফুফু আমাদের ছেড়ে রব এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন । আল্লাহ যেন তাকে বেহেশতে নসিব করেন। আর এই অনন্তকালের যাত্রার প্রস্তুতি নেবার তৌফিক আমাদের দেন।

‘প্রত্যেক প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আমি তোমাদের ভালো ও খারাপ অবস্থা দিয়ে পরীক্ষা করি। আর আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসতে হবে।’
(সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩৫)