কাজল

আজ অফিস থেকে বাসায় ফেরার সাথে সাথে দরজা খুলে প্রথম যে বাক্য শুনলাম তা হল, কাজল বাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিল!

ভাইরে ভাই, পরের লাইন সোনার আর সময় হলো না আমাদের কারো। নায়রাহ হাউমাউ করে ভেল ভেলাইয়া চেল চেলাইয়া চোখের পানি নাকের পানি একাকার করে কান্না শুরু করলো। ( সেকেন্ডের মাথায় কেমনে কাঁদে পোলাপান!! বকা শুনার আগেই চোখের পানি ফেলতে শুরু করে , এ কেমন যুগে আসলাম!!)

ওর কাজলকে কেন খাঁচা থেকে ছাড়া হল এই দুঃখে সে বিলাপ শুরু করে দিল। বললাম, আগে গিয়ে দেখে আসো সে খাঁচাতে আছে কিনা। যথাস্থানে কাজলকে দেখেশুনে পরে ঠান্ডা হলো।

এদিকে খাঁচা থেকে তিন দিন পর ছাড়া পেয়ে কাজল একলাফে দোতলা থেকে পাশের কানেক্টিং বারান্দায় চলে গেল। পরে ঝাঁপ দিয়ে নিচে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ৪/৫ জন মানুষ মিলে দৌড়ঝাঁপ করে কাজলকে ধরা হলো। মানুষজন ঘটনা এনালাইসিস করে বলতে লাগলো, বেচারার যেহেতু বউ বা বান্ধবী নাই তাই সে দৌড় ঝাপ দিয়ে বান্ধবী খুঁজতে যেতে চাচ্ছে!!

রোজার সময় নানু বাড়িতে গিয়ে তার জন্য বান্ধবীর ব্যবস্থা করেও আসার সময় আনতে ভুলে গিয়েছিলাম!!

ছানাদের বাপের ভাষ্যমতে, এটা এখন আর আমাদের বাসা না। সবার কাছে এটা এখন মুরগির বাসা। সবাই জিজ্ঞেস করছে এই তাহলে আপনাদের সেই মোরগ যে সারাক্ষণ ডাকাডাকি করে!! ভোর থেকে যেহেতু কাজল তার কুক কুরু কু ডাকতে থাকে, পুরা আবাসিক এলাকায় সকালের নীরব সময়টাতে সে ডাক বেশ প্রতিধ্বনিত হয়। মানুষজন কাজল, অরেঞ্জ, পিটুনিয়া… সবার খোঁজ খবর নিচ্ছিল তার কাছ থেকে….

ওরা তো দেখি এই মহল্লার সেলিব্রেটি!!