ছানা পোনা উপদ্রবে ব্যস্ত জীবন

জুতার নীচে লেগে থাকা ময়লা খেতে কতো যে মজা, তা বাচ্চাদের না দেখলে বোঝা যায় না। সু রেক থেকে একটার পর একটা ছোট, বড়, মাঝারি সাইজের জুতা টেনে বের করা হয় এবং জিভ দিয়ে জুতা নিচের অংশ চেটে চেটে পরিস্কার করা হয়(সুযোগ পেলেই)।

বাসার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা পুঁতি, কাগজ, রং, পড়ে যাওয়া এবং পিঁপড়ে খাওয়া খাদ্যাংশ,যেকোন রকম ময়লা টুকরো দেখা মাত্র মুখে চালান করে ছোট পুত্র। ভাই বোনের রেখে দেওয়া রঙের বাক্স থেকে রং নিয়ে আনন্দ সহকারে খেতে থাকে, এক্সপ্রেশন দেখে মনে হয় যেন ললিপপ খাচ্ছে!!!😋 পোলাপান এরকম কেন???

অথচ নির্দিষ্ট তিন বেলা খাবারের পাশাপাশি অন্য কোন খাবার সে মুখেই দেয় না। খাবার ছাড়া যেকোনো জিনিস খাবার মনে করে মুখে ঢোকানোর বিষয়ে নুবাঈদ একজন বিশেষজ্ঞ।🙄

অন্যদিকে পাহাড়-পর্বত অতিক্রম করার ব্যাপারে দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা লক্ষ্য করা যায় তার মাঝে। খাটে, চেয়ার-টেবিলে, ওয়ারড্রব এর উপর, ডিপ ফ্রিজের উপরে যে কোন জায়গায় চোখের পলকে পারলে বেয়ে বেয়ে উঠে যায়।

তার জীবনের এই মুহূর্তে একটি অন্যতম লক্ষ্য হলো বাবার কম্পিউটার , কিবোর্ড, মাউস ইত্যাদির তার ধরে টানাটানি করা এবং মাল্টি প্লাগ যেখানে থাকে সেই জায়গায় হাত দেওয়া। ১০ সেকেন্ড ও যদি চোখের আড়াল হয়, নিমিষেই তাকে আমরা ঐ জায়গায় আবিষ্কার করি। (আল্লাহ হেফাজত করুক, এই বিষয়ে আমরা খুব ভয়ে থাকি)

পড়ে গিয়ে থুতনিতে রক্ত জমাট বেধে যায়, মুখে আচড় কেটে দাগ হয়ে যায়, আঙ্গুলে খোঁচা খেয়ে চামড়া উঠে যায় , আর মাথায় আলু ফোলা তো ডাল ভাত।🥴

দিন আর রাত এক হয়ে যায় তাকে পাহারা দিতে দিতে। দিনে পাহারা, রাতে কাজ এভাবেই চলছে।(এতো পাহারায় থেকেও স্ট্যাটাসখানা লিখার সময় টেবিলের সাথে মাথায় বাড়ি খেল 😐)

তবুও আমরা আনন্দিত সময় কাটাচ্ছি। পেটে খাবার থাকলে সবকিছুতেই আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায়।

এই আনন্দের স্থায়িত্ব কতদিন থাকে সেটাই ভাবার বিষয়। এখনো খাবার-দাবার কিনে খেতে পারছি(সব কিছুর দাম আকাশছোঁয়া 😓)। সুস্থ ভাবে শ্বাস নিতে পারছি। আত্মীয় স্বজনেরা আলহামদুলিল্লাহ প্রায় সবাই ভালো আছে।
ফ্রি ফ্রি অক্সিজেন গ্রহণ করছি। এই অক্সিজেনের নেয়ামত, শুকরিয়া , কৃতজ্ঞতা আদায় করছি তো??🤔

#ছানাপোনাউপদ্রবেব্যস্তজীবন……