ছুটির ঘন্টা

টুইংকেল কে বাসায় আনার কয়েকদিন পরে নুবাঈদের চোখ দিয়ে ময়লা বের হওয়া শুরু হলো। আস্তে আস্তে দেখলাম দুই চোখ লাল হয়ে যাচ্ছে। থেকে থেকে জ্বরও আসছে। বেশ খারাপ অবস্থা। দুই তিন দিন নাপা দিলাম। পরে দেখি কান থেকেও পানির মত বের হচ্ছে। এরপরে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডাক্তার বললো ঠান্ডা জনিত ইনফেকশন হয়েছে। এন্টিবায়োটিক দিলো। দু তিন ধরনের ওষুধ খাওয়াতে গিয়ে ছেলে আমার বমি করে অস্থির। এতে করে তার খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেল।

এদিকে তার চোখ যখন ঠিক হতে লাগল, একই রকমভাবে নায়রার ও চোখ লাল হওয়া শুরু করল, চোখ দিয়ে ময়লা বের হলো এবং কান ব্যথা শুরু হলো। কানের ব্যথায় মাঝরাতে কেঁদেকেটে অস্থির হয়ে গেল সে। তাকে আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে দৌড়াদৌড়ি। অ্যান্টিবায়োটিক দিলো এবং আস্তে আস্তে ভালো হতে লাগল।

ভয় পেলাম, বিড়ালের কারণে কোনো ঝামেলা হচ্ছে কিনা। পরে ডাক্তার আশ্বস্ত করলো যে ঠাণ্ডাজনিত কারণে এমনটা হয়। কিন্তু এই বিষয়টা আমাদের জন্য একদম নতুন ছিল, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে ময়লা বের হওয়া, কান ব্যথা হওয়া। 😔

দুই ভাই-বোনকে দেখাশোনা করতে গিয়ে দেখলাম তাদের খাওয়ার রুচি একদম নষ্ট হয়ে গেছে। কন্যাকে যা একটু খাওয়ানো যায়, কিন্তু ছোট পুত্র প্রচন্ডভাবে খাবার এড়িয়ে যেতে শুরু করলো।

না খেতে না খেতে তার অবস্থা খুবই খারাপ। মোটামুটি তিন চার কেজি ওজন কমে গেছে এবং ক্রমাগত রাগ হয়ে থাকে। চোখের নিমিষে জিনিসপত্র ভেঙেচুরে ফেলে দিচ্ছে। মন মত না হলে কান্নাকাটি করছে। আর খিদায় মাঝরাতে চলে অনেক কান্নাকাটি আর চড়-থাপ্পড়।

কয়দিন ভালো থাকার পর এখন আবার দেখছি নুবাঈদের চোখ দিয়ে ময়লা বের হচ্ছে। খাবারের রুচি এখনো ফেরত আসেনি।

শীতের ছুটি এখন। সামনে বেশ কিছুদিনের জন্য তাদের নানার বাড়ি, দাদার বাড়ি ঘুরে আসব। দেখি রুচির পরিবর্তন হয় কিনা।

বাচ্চারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ছুটির ঘন্টা বাজল বলে 🎉🎉