বৃদ্ধ অবস্থা বনাম আমরা

গতকাল খবরে দেখলাম, মালিবাগে একটা কাজের মহিলার ও বৃদ্ধার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সত্তরোর্ধ একজন বৃদ্ধা মহিলাকে প্রচন্ড ভাবে পিটিয়ে মোবাইল, টিভি, গহনা ডাকাতি করে নিয়ে গেছে। বৃদ্ধার ছেলে, ছেলের বউ , মেয়ে সবাই অফিসে। কাজের মেয়েটার সাথে বৃদ্ধা একা বাসায় ছিল।

মহিলাটি বেশ অসুস্থ ছিল , যার জন্য তাকে ধরে গোসল করানো বা আনুষঙ্গিক কাজ করানো লাগতো। তাই তার দেখাশোনার জন্য কাজের মেয়েটি রাখা হয়েছিল, যে তাদের পূর্ব পরিচিত এবং বছরখানেক ধরে কাজ করেছিল আগে। বৃদ্ধ মানুষটি ঐ কাজের মেয়েটির দ্বারা প্রচন্ডভাবে রক্তাক্ত, নির্যাতিত হয়েছে।

আমার শুধু মনে হচ্ছিল , সামনে কি আমাদের জন্য এমন একটা ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে? আমাদের বর্তমান প্রজন্মের বেশিরভাগেরই একটি বা দুটি করে সন্তান। তারা যখন বড় হবে, কর্মজীবনে প্রবেশ করবে, বৃদ্ধাবস্থায় তখন আমাদেরও তেমন একাকী থাকতে হবে।
ছেলের বউ ও আমরা কর্মজীবীই খুঁজবো। অথবা ছেলের বউ রা ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকবে দূরে বা প্রবাসে। আমরা বৃদ্ধ বয়সে একা থাকবো।

শারীরিক শক্তি থাকা অবস্থায় বৃদ্ধ মানুষরা মোটামুটি চলে ফিরে নিজের কাজ করতে পারে। কিন্তু যখনই অসুস্থতাজনিত কারণে বৃদ্ধাবস্থায় কেউ বিছানায় পড়ে যেতে বাধ্য হবে তখন তাদেরকে কে দেখবে কাজের মানুষ ছাড়া??

চোখ বন্ধ করে দিব্বি যেন নিজের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। যতদিন শরীরে শক্তি থাকে এবং টাকা উপার্জনের ক্ষমতা থাকে তখন অসুস্থ হলে কে দেখবে, এই চিন্তা করিনা। কোন ধরনের নেতিবাচক ভবিষ্যৎ চিন্তা মাথায় আনিনা।

কিন্তু আমাদের বৃদ্ধাবস্থা আসলে আমরা আসলেই কাছে থাকার মানুষ আপন মানুষ পাবো তো??
আল্লাহ আমার মা-বাবাকে সহ পরিবারের সকল মুরুব্বিদের সুস্থ রাখুক , ভাল রাখুক।

বর্তমানে আমার নানু অসুস্থ, হাসপাতালে আছেন। আজই তার অপারেশন হয়েছে। তার কাছে তার পাঁচ মেয়ে এবং পাঁচ জন ছেলে আছে। পালাক্রমে চার – ছয় জন করে নানুর কাছে থাকছে। কারো সংসার আছে , কারো কর্মক্ষেত্র আছে। কেউ চলে গেলে অন্য কেউ এসে জায়গাটা ফিল আপ করছে।

আমাদের ভবিষ্যতে আমরা আমাদের সন্তানদের কি পাব বৃদ্ধ অবস্থায় , অসুস্থ অবস্থায়? নাকি কাজের মানুষ বা বৃদ্ধাশ্রম আমাদের নিয়তি হয়ে দাঁড়াচ্ছে?? 😓😓😓