ফ্ল্যাশ ফ্লাড কার্যক্রম, ২০২৪

আমাদের স্বপ্ন ডাঙ্গা আবাসিক এর পক্ষ থেকে আজ সাহায্য নিয়ে গিয়েছিলাম। গতকাল সন্ধ্যার সময় জানিয়েছিলাম আমাদের নিজস্ব মেসেঞ্জার গ্রুপে। Farjana Kabir ভাবি আন্তরিকভাবে আমার আর্জি জানিয়েছিল সবাইকে। সকালের মধ্যে প্রিয় আপা এবং ভাবীরা মিলে অনেকগুলো জামা কাপড়ের বস্তা রেডি করে দিয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ তাদের সবার নেক আমল গুলো কবুল করুক।

TSC তে জমা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বস্তা তৈরি করলাম। বাসা থেকে বের হবার আগে আমার ছাত্রদের সাথে যখন কথা হল, তখন সেদিকে না গিয়ে ছাত্রদের তহবিলে সেগুলো ডোনেট করে আসলাম। সেখানে আমার বড়’পা Shahnaz Rejwan সাথে দেখা হয়ে গেল যিনি তার ডোনেশন নিয়ে এসেছিলেন। ছাত্ররা বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছে।

ওখান থেকে ঢাকা ইউনিভার্সিটি বিজনেস ফ্যাকাল্টি রওনা দেই। ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট হেড, প্রফেসর Jahangir Alam Chowdhury স্যারের আমন্ত্রণে সেমিনারে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। বিভিন্ন ব্যাচের ,বিভিন্ন পেশার ,বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের ছাত্র ,শিক্ষক মানুষজন এসেছিল সেখানে অংশ নিতে।

অনেক কথার মাঝে স্যারের একটা কথা বেশ মনে দাগ কেটেছে। স্যার বলেছিলেন, “আমি ১৯৯১ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সরাসরি জড়িত ছিলাম। যখন দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়, এরশাদের পতন হয়,তখন সারা বাংলাদেশ অনেক খুশি ছিল। তখন আমাদের মনে হয়েছিল আমরা আরেকবার স্বাধীনতা পেয়েছি। এবং তখন এত মানুষজনের মৃত্যু হয়নি।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে ২৫ বছর পরে আমরা বলছি যে , এরশাদের শাসন হাসিনা শাসনের চাইতে ভালো ছিল। হাসিনা সবচেয়ে বড় স্বৈরাচার। তাই আমরা কোনভাবেই পাঁচ বছর বা ১০ বছর পরে বলতে চাই না যে, হাসিনার শাসন পরবর্তী ডট ডট শাসনের চাইতে ভালো ছিল। এজন্য এখন থেকে আমাদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে এবং প্রত্যেককে যার যার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।”

সামনে করনীয় পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে সেমিনার শেষ হোল। আমাদের fin 11 এর একজন মাত্র সহপাঠীর সাথে দেখা হয়েছিল।

সেমিনার শেষে TSC গেলাম। যাবার পথে মধুর ক্যান্টিনে একবার ঢু মারলাম। এরপর লাইব্রেরীর সামনে থেকে আকাংখিত দুটো বই কিনলাম। সেখানে সহকর্মী Israt Zahan আপার সাথে দেখা হয়ে গেল।

😂
😂
😂
😂

TSC তে হাজার হাজার মানুষকে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে ছুটতে দেখলাম। উৎসুক আমি উকি মেরে দেখলাম একটু করে। এক ফাকে এক কাপ চা খেয়ে নিলাম আর টুক করে কয়েকটা ছবি তুললাম। সেখানে প্রচুর মানুষ বেড়াতেও এসেছিল। যার জন্য প্রচন্ড ভিড় ছিল- মানুষের, রিক্সার ও গাড়ির ভিড়। পরে স্বেচ্ছাসেবকদের থেকে মাইকে ঘোষণা দিতে লাগলো, যারা এখানে অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করছেন, ছবি তুলছেন, চা খেতে গিয়ে বসে থাকছেন অনেক সময় ধরে…. তারা সবাই হাউন আঙ্কেল!!

বাসায় ফিরে যাবার সময় দেখলাম বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে বাচ্চাদেরকে, বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষজনকে সাহায্যের জন্য বসে থাকতে দেখলাম। যেমন- বিজিবি দুই নম্বর গেট (হাজারিবাগ ), গণকটুলি, বিজিবি চার নাম্বার গেট, ঢাকা কলেজ , আজিমপুর গোরস্থান ইত্যাদি। এমনকি মসজিদ গুলোর সামনেও দেখলাম বিভিন্ন রকমের বস্তা রাখা।

এখন একটাই দোয়া এই সাহায্য যেন সঠিক মানুষদের কাছে পৌঁছায়। অনেক দূরবর্তী জায়গায় এখনো কোনো সাহায্য পৌঁছেনি। রাস্তাঘাটের অবস্থা বিভিন্ন জায়গায় অনেক খারাপ। জনসাধারণ যার যার জায়গা থেকে আন্তরিকভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন যারা এই সেবাগুলো বন্যার্তদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে তাদের উপরে বড় দায়িত্ব যেন সঠিকভাবে তাদের কাজ সম্পাদন করতে পারে।

♥️
♥️
♥️

জাতীয় এই দুর্যোগে আবার আল্লাহ আমাদের সবাইকে একত্রিত করেছেন। এই একতা যেন সব সময় থাকে। আল্লাহ যেন আমাদের সব ধরনের অপশক্তি থেকে রক্ষা করেন। যারা সবসময় সত্যের পথে আছে, আল্লাহর দেখানো পথে আছে তাদের যেন বিজয় দান করেন। আমিন।