বাচ্চাদের বাবা একদিন আমাকে বলছিল, আমি নাকি নুবাঈদের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি!! আমি বললাম, আমি তো আরো অনেকের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি; সেটা কি কেউ দেখে না??!! 🤨
তখন আর কিছু বলে না!! ( আমি খুব সহজেই মুগ্ধ হয়ে যাই)
তবে আমি বিষয়টা ভাবার চেষ্টা করলাম। ছোট বাচ্চার প্রতি এমনিতেই সব বাবা মায়েদের আলাদা ভালোবাসা কাজ করে। তারা বেশ ঢংগী হয়! আমার ছোট পুত্র তার ছোট দুই হাত দিয়ে বারবার আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করে। আরো কতো কি করে!! তখন আলাদা একটু ভালোবাসা কাজ করে ঠিক ই। কিন্তু তার মানে এই না যে আমি আমার বড় বাচ্চাগুলোকে ভালোবাসি না। বিষয়টা হলো ছোটটা মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে যায় , যেহেতু সে ছোট। সে অনেক বেশি নির্ভরশীল।
তাই আমি আমার ছেলেমেয়েগুলোকে সমান ভাবে মনোযোগ দেয়ার চেষ্টা করি। তবে অবশ্যই মনোযোগ বেশি পায় কোলের বাচ্চাটা। আস্তে আস্তে খেয়াল করলাম, নায়রাহ, নাওঈদ-ওরা আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে, যখন আমি নুবাঈদকে আদর করি। ওরা ও মনোযোগ পাবার জন্য বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করতে থাকে।🥰🥰
এটা বোঝার পর আমি বড় দুজনকেই প্রাণপনে বেশি করে আদর করার চেষ্টা করি। বেশি বেশি করে জড়িয়ে ধরে বেশি বেশি করে বলি, আমি তাদের কতখানি ভালোবাসি।
চারপাশে থেকে দেখে শিখেছি, বাচ্চারা খুব আদর খেয়াল করে। ছোট বেলায় কিছু না বললেও, বড় হয়ে ঠিক ই অভিযোগ করে, আমাকে কম ভালোবাসো। অমুক তমুক কে বেশি ভালোবাসো।
ছোট বেলা য় আমি বকা/মার খেলে ভাবতাম, আমাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পেয়েছে (বাংলা সিনেমা ইফেক্ট) 😎😎। অথবা ভাইয়াকে বেশি ভালো বাসে, আমাকে কম!!! কত মন খারাপ করতাম!! অবশ্য ছোট দুই ভাই বোন হবার পর সমীকরণ পাল্টে গিয়েছিল। 🙄
অনেক বাবা মা বাচ্চাদের সামনে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে থাকে। এতে সন্তান হীনমন্যতা নিয়ে বড় হয়। সন্তানকে শারীরিক ভাবে বড় করলেই হয়না। আত্মিক ও মানসিক ভাবে ও তাদের পরিচর্যা প্রয়োজন। কেউ মেয়ের চাইতে ছেলেকে প্রাধান্য দেয়, কেউ যে সন্তানের রেজাল্ট/ক্যারিয়ায় ভালো বা যার টাকা বেশি তাকে প্রাধান্য দেয়….. ইত্যাদি। কিন্তু বাবা মা হিসেবে সবার প্রতি সমান যত্নবান হওয়া উচিত।মা বাবার প্রতি যেমন সন্তানের দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি সন্তানের প্রতি ও মা বাবার দায়িত্ব রয়েছে। তারা আমাদের কাছে আল্লাহর দেয়া আমানত। তাই আমানত সঠিকভাবে দেখেশুনে রাখা আমাদের কর্তব্য।
পোলাপাইন একা একা লালনপালন বেশ কঠিন কাজ। এতো কাজ সামলে বাচ্চাদের মন মানসিকতার খবর রাখা কষ্টকর হয়ে যায়। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের বাবা র সহযোগিতা পেলে মোটামুটি ভাবে দিন পার করা যায় ছানাদের নিয়ে।