ইদানিং ভার্চুয়াল জগত , সোশ্যাল সাইট গুলো তে ঢুকলে খুব মন খারাপ হয়। এত কষ্ট লাগে….. মনে হয় যেন বিপদ গুলো আমার উপরে এসেছে !!! এত অন্যায়, এত জুলুম, এত অবিচার সহ্য করার মতো না । মেয়েরা জায়গায় জায়গায় নির্যাতিত , লাঞ্চিত, অপমানিত । বাবা, ভাই, ছেলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে খুন, জুলুম , নির্যাতনের শিকার বা গুম হয়ে যাচ্ছে!! নতুবা আবরারের মত ছয় ঘন্টা পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে !!! ভাবতে সারা শরীর শিউরে উঠে!
খুব কষ্ট লাগে যখন দেখি একই ধরনের অন্যায় দিনের-পর-দিন হচ্ছে। কারো কোনো বিকার নাই। আমরা আমাদের মত ভোগবিলাস, আনন্দে জীবন কাটাচ্ছি!! আসলে যার কোন কিছু হারায় সে ছাড়া এ কষ্টগুলো আমরা উপলব্ধি করতে পারিনা। কিন্তু এমনটি কি হওয়ার কথা ছিল??
হজরত নুমান ইবনে বশির রাজি. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনদের পরস্পরের ভালোবাসা, অনুগ্রহ, হৃদ্যতা ও আন্তরিকতার উদাহরণ হচ্ছে একটি দেহ বা শরীরের মতো। যখন দেহের কোনো একটি অঙ্গ আহত বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন সারা দেহের সবগুলো অঙ্গই নিদ্রাহীন হয়ে পড়ে এবং কষ্ট-যন্ত্রণায় জরাগ্রস্ত ও কাতর হয়ে পড়ে।’ (সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম)
আমরা মুসলিম উম্মাহ নিজেদের এখন আর এক দেহের মত করে অনুভব করতে পারিনা। তাইতো যার যা খুশি হোক আমি তো ভালো আছি – এই নীতিতে আমরা দিন পার করে দিচ্ছি । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা আসলে কতদিন এভাবে ভাল থাকতে পারবো?
একদিকে কেউ নির্যাতিত-নিপীড়িত লাঞ্ছিত হচ্ছে , অন্যদিকে আমরা চুপচাপ সেগুলো সহ্য করে যাচ্ছি। আমাদের মতো মানুষদের জন্য কি আছে সামনে??
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি জাতি হওয়া উচিত যারা সব ভালো কাজের দিকে আহ্বান করবে, সৎকাজের আদেশ দেবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে, প্রকৃতভাবে তারাই সফলকাম সম্প্রদায়। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত:১০৪)
নবি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি কোনো খারাপ কাজ বা বিষয় দেখে তাহলে সে যেন হাত দিয়ে তা পরিবর্তন করে দেয়, যদি তা করতে অপারগ হয় তাহলে যেন মুখ দিয়ে তার প্রতিবাদ করে, যদি তাও করতে সক্ষম না হয় তাহলে যেন অন্তর দিয়ে তা ঘৃণা করে, আর এটাই হচ্ছে ঈমানের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলতম স্তর। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ১৯৪)
সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজে বাধা দেওয়া ফরজ। কোন মুমিন এ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না। হজরত হুজায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যার হাতে আমার প্রাণ নিবদ্ধ তাঁর শপথ! তোমরা অবশ্যই ন্যায় কাজের আদেশ করবে এবং অন্যায় কাজ থেকে (মানুষকে) বিরত রাখবে। অন্যথায় আল্লাহ তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের ওপর আজাব পাঠাবেন। অতঃপর তোমাদের পরিত্যাগ করা হবে এবং তোমাদের দোয়াও কবুল করা হবে না।’ (তিরমিজি)
বর্তমানে আমাদের যে অবস্থা তাতে মনে হয় আমরা আসলে আজাবের জন্য বসে আছি!!
( খুব ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো,আমাদের অন্যের জন্য যখন মন খারাপ হয় তখন সেটা আমরা খুব সহজে ভুলে যাই। যেহেতু এই দুঃখের ঘটনাটা আমার সাথে ঘটে নাই !!
অনেকদিন পর খালার হাতের রান্না খেলাম। নিজের হাতের খাবার খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। যেহেতু কোথাও যেতেও পারি না এবং কেউ বাসায় আসে না , তাই নিজের হাতের রান্না খেয়ে যাচ্ছি গত আট/ দশ মাস ধরে। এতদিন পর আন্টির হাতের রান্না খেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেছে !!! চিন্তা করে দেখলাম আমরা কত সহজে খুশি হয়ে যাই, দুঃখ ভুলে যাই!! হায় আফসোস!!)
মন খারাপ
by
Tags: