বাচ্চাদের নিরাপদ শৈশব

প্রায় প্রতি ছুটির দিনে বাচ্চারা আবদার করে- কোথাও ঘুরতে নিয়ে চলো। বেশিরভাগ সময় এটা কন্যার আবদার হয়। পুত্রগণ প্রায় সারাদিন উপরে নিচে খেলে। প্রায় প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে যায়। মোটামুটি বাসা থেকে ওরা বের হয়। কন্যার ক্ষেত্রে স্কুল আর বাসা ছাড়া অন্য কোথাও না নিলে বাসা থেকে বের হওয়া হয় না। তাই মাঝে মাঝে সে খুব বিরক্ত হয়ে যায় এবং ক্রমাগত ঘ্যানর ঘ্যান করতেই থাকে ঘুরতে যাবার জন্য।

মাঝে মাঝে বাসার আশেপাশে নিয়ে যাই। দূরে কোথাও যাওয়া হয় হয়তো মাসে-দু’ মাসে একবার!

মনে করার চেষ্টা করি, আমাদের ছোটবেলায় আমরা কি করতাম! আমরা বিকেলে দল বেঁধে পুরা বিল্ডিং এর ছেলেমেয়েরা একসাথে খেলতাম। বিল্ডিংয়ে তিনটা ছাদ ছিল। দোতালায় , তিনতলায় আর পাঁচ তলায়। ঝড় বৃষ্টি, পরীক্ষা- কোন কিছুতেই আমাদের খেলা খুব একটা বন্ধ থাকত না! খুব প্রাণোচ্ছল শৈশব কাটানোর ফলে এদিক সেদিক বেড়ানোর আবদার মনে হয় খুব বেশি একটা করতাম না। তবুও অনেকদিন বাদে বাদে কোথাও যদি ঘুরতে যেতাম সেটা থাকতো বোনাস।

এখন ফ্ল্যাটকেন্দ্রিক জীবন যাপন হওয়াতে বাচ্চাদের খেলাধুলা খুব কম হয়। আবাসিক এলাকা খাওয়াতে আমাদের ছেলেরা তবুও বাসার সামনের মাঠে খেলতে পারে। কিন্তু মেয়েরা তো বাসা থেকে বের হয় না! নিরাপত্তা ইস্যুতে একা একা কোন বাচ্চাদের ছাড়াও হয় না। আমার বেচারি মেয়ে মাঝে মাঝে ভাইদের সাথে নিচে নামে! বারান্দা থেকে তাই কিছুক্ষণ পরপর আমি উকি ঝুকি মেরে দেখতে থাকি সবাইকে দেখা যায় কিনা!

আজ বিকালে শুনি বাচ্চারা সমানে শোরগোল করছে, স্লোগান দিচ্ছে।

” ছিঃ ছিঃ হাসিনা

লজ্জায় বাঁচি না!!”

কচি কচি কন্ঠের সমবেত স্লোগান কি যে অদ্ভুত শোনাচ্ছিল!!

আবিষ্কার করলাম, এই স্লোগান দেয়া ওদের খেলাধুলার একটা অংশ!!

ওদের ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি যখন থাকে তখন ওরা বেশ আনন্দিত থাকে এবং মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করে। সেটা অল্প সময় হলেও এবং নির্দেশনা মানার চেষ্টা থাকে। তাছাড়া ওদের ঘুমটাও বেশ সাউন্ড হয়। বাচ্চাদের আউটডোর অ্যাক্টিভিটি খুবই প্রয়োজনীয়। এটা ওদের শারীরিক বৃদ্ধিতে খুবই সহায়ক।

বাচ্চাদের নিরাপদ শৈশব- ওদের অধিকার!